একবার হযরত উমর (রা.)-এর নাতি
একবার হযরত উমর (রা.)-এর নাতি প্রখ্যাত তাবেয়ি হযরত সালেম (রহ.) পবিত্র মক্কায় কাবা শরীফের তাওয়াফ করছিলেন। সেখানে তৎকালীন মুসলিম জাহানের বাদশাহ হিশাম ইবনে আব্দুল মালিকের সাথে তার দেখা হলো।
বাদশাহ হিশাম সালাম দিয়ে অত্যন্ত বিনীতভাবে বললেন, "হুজুর! আপনার কোনো প্রয়োজন থাকলে আমাকে বলুন। আমি আপনার সেবা করতে চাই।"
হযরত সালেম (রহ.) তখন এক অসাধারণ উত্তর দিলেন। তিনি বললেন:
"আমি আল্লাহর ঘর বাইতুল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে কিছু চাইতে লজ্জা পাই। আদব হলো, এখানে শুধু তাঁর কাছেই হাত পাতা উচিত।"
এ কথা শুনে বাদশাহ চুপ হয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর হযরত সালেম যখন মসজিদ থেকে বের হলেন, তখন বাদশাহও তাঁর পিছু পিছু বের হলেন। বাইরে এসে তিনি আবার বললেন:
"হুজুর! এখন তো আপনি আল্লাহর ঘরের বাইরে আছেন। দয়া করে বলুন, আমি আপনার কী সেবা করতে পারি?"
সালেম (রহ.) তখন জিজ্ঞেস করলেন: "হিশাম! বলুন, আমি আপনার কাছে কী চাইব? দুনিয়া, নাকি আখেরাত (দ্বীন)?"
বাদশাহ জানতেন যে আখেরাতের মালিক তো আল্লাহ, তাই তিনি বললেন, "হুজুর! আপনি আমার কাছে দুনিয়ার কোনো কিছু চান।"
তখন সালেম (রহ.) এমন এক কথা বললেন, যা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে:
"যেই দুনিয়া আমি কখনো তার মালিক ও স্রষ্টার (আল্লাহর) কাছেই চাইনি, সেই দুনিয়া আমি তোমার কাছে কেন চাইব?"
এ কথা শুনে বাদশাহর চেহারা লজ্জায় মলিন হয়ে গেল। তিনি বুঝতে পারলেন, আল্লাহর প্রকৃত ওলিরা দুনিয়ার মানুষের কাছে হাত পাতেন না।
যাদের আল্লাহর দরবারে চাওয়ার অভ্যাস আছে, তারা কখনো দুনিয়াদার মানুষের কাছে মাথা নত করেন না। আত্মমর্যাদা ও তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) মুমিনের ভূষণ।
(রেফারেন্স: সিয়ারু আলামিন নুবালা,ওফায়াতুল আইয়ান)
কমেন্ট